আমার কক্সবাজার ডেস্ক ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৯:৪৩
দক্ষিণ চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকার বাসিন্দাদের আরো উন্নত অবকাঠামোগত সুবিধা দিতে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা ঋণ দেবে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ‘দক্ষিণ চট্টগ্রাম আঞ্চলিক উন্নয়ন (এসসিআরডি)’ শীর্ষক এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে এই প্রকল্প প্রস্তাব উপস্থাপন করার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রকল্পটি প্রসঙ্গে পরিকল্পনা সচিব সত্যজিৎ কর্মকার জানান, দক্ষিণ চট্টগ্রাম অঞ্চল পাবলিক অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে এমআইডিআই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে অবদান রাখবে। এ ছাড়া কক্সবাজার জেলার পাঁচটি উপজেলা এবং তিনটি পৌরসভার অবকাঠামোগত উন্নয়নও হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এই প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে তিন হাজার ৬৪৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে এক হাজার ১৪৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা এবং জাইকার ঋণ সহায়তা থেকে দুই হাজার ৪৯৭ কোটি পাঁচ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে দক্ষিণ চট্টগ্রাম অঞ্চলের জনগণের (কক্সবাজারের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা) জীবনযাত্রার মান উন্নত করা হবে। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং বৈষম্য দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রকল্পের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিভাগের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. এনামুল হক বলেন, ‘প্রকল্পটি একনেকে পাস হলে দক্ষিণ চট্টগ্রাম তথা পুরো চট্টগ্রামেই ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে সড়ক, খাল বা ক্যানেল উন্নয়ন, ব্রিজ-কালভার্ট, সড়কের পাশে নালা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ফলে মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটবে।’
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি একনেকে আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এর বাস্তবায়নকাজ শেষ করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।
প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে ১০১ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ বা ৯৬.১০ কিলোমিটার সড়ক, তিনটি টাউনশিপ, প্রায় ১৮ কিলোমিটার খাল বা ক্যানেল উন্নয়ন, এক হাজার ৩৫ মিটার ব্রিজ-কালভার্ট, সড়কের পাশে ১৯৬ কিলোমিটার নালা এবং চারটি কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কাঠামো নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া ১৯২ কিলোমিটার সড়কের পাশে ফুটপাত, তিনটি বহুমুখী বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র, ৯টি বাজার, একটি প্রশিক্ষণকেন্দ্র, ৯টি গণশৌচাগার, দুই হাজার ৪০৯টি সড়ক বাতি, পানি সরবরাহ এবং দুটি পার্ক স্থাপন করা হবে।