৫৭৩ মিনিট আগের আপডেট; দিন ৮:৩৭; মঙ্গলবার ; ১৮ মার্চ ২০২৪

রামুর জোয়ারিয়ানালায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের জমি জবর-দখলে মেতেছে ভূমিগ্রাসী চক্র

নিজস্ব প্রতিবেদক, রামু ১২ এপ্রিল ২০২১, ২২:৫২

রামুর জোয়ারিয়ানালায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষকের জমি জবর-দখলে মেতে উঠেছে এলাকার প্রভাবশালী ভূমিগ্রাসী চক্র। বিজ্ঞ আদালত, উপজেলা প্রশাসন, থানা, ইউনিয়ন পরিষদ সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কাংখিত প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগী শিক্ষক আবদুস শুক্কুর (৬৭)। তিনি রামুর জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের সওদাগরপাড়া এলাকার মৃত আবুল খাইর এর ছেলে।

হয়রানির শিকার শিক্ষক আবদুস শুক্কুর জানিয়েছেন-সম্প্রতি জোয়ারিয়ানালা এইচএম সাঁচি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন তাঁর দখলীয় প্রায় ৪০ শতক জমি জবর-দখল করেছে ভূমিদস্যু চক্র। এরমধ্যে ধানি জমিও জবর-দখল করে টিনের ঘর এবং ঘেরা-বেড়া নির্মাণ করেছেন। আশপাশের আরো কিছু জমিও জবর-দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে চক্রটি। জবর-দখলে জড়িতরা হলো-জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের কবির আহমদের ছেলে ফরিদ আহমদ, নজির আহমদের ছেলে এনামুল হক, আজিজুর রহমানের ছেলে নুরুল হক, কবির আহমদের ছেলে মোহাম্মদ ওসমান, রফিক আহমদ, মোস্তাক আহমদের ছেলে রবি উল্লাহ, নজির আহমদের ছেলে রাজা মিয়া, মোস্তাফিজুর রহমান এবং কবির আহমদের ছেলে মো. ইসমাইল কালু।

বয়োবৃদ্ধ এ শিক্ষক আরো জানান- ভূমিদস্যুরা তাঁর জমি জবর-দখলের চেষ্টাকালে গত ১ মার্চ রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। ইউএনও ওই অভিযোগটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রামু থানাকে অনুরোধ জানান। এনিয়ে রামু থানা পুলিশ সরেজমিন গিয়ে দু’পক্ষকে ডেকে বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা চালায়। কিন্তু জবর-দখলকারিরা থানা পুলিশের কথার কোন তোয়াক্কা না করায় তিনি কোন ন্যায় বিচার পাননি। তিনি আরো জানান-এরআগে ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর তিনি জবর-দখল চেষ্টার অভিযোগে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও কোন প্রতিকার পাননি। এরআগে তিনি বিরোধীয় জমিতে ১৪৪ ধারা চেয়ে বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এমআর মামলা (নং ১২/২০১৯) দায়ের করেন।

ওই মামলার প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত উভয় পক্ষকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার নিদের্শ দেন। কিন্তু আদালতে নির্দেশ উপেক্ষা করেও ভূমিদস্যুরা এখানে নির্মাণকাজ চালায়। এসব জবর-দখলের নেতৃত্ব দেন এলাকার চিহ্নিত ভূমিদস্যু নুরুল হক। তাদের বিরুদ্ধে জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদের লিখিত অভিযোগ দেয়া হলেও পরিষদের সালিশ বৈঠকেও তারা যাননি।

জানা গেছে, প্রায় ২ বছর ধরে এলাকার ভূমিদস্যুদের একটি চক্র শিক্ষক আবদুস শুক্কুরের পৈত্রিক ও ক্রয়সূত্রে মালিকানাধিন বিপুল জমি জবর-দখলের চেষ্টা শুরু করে। ১২ বছর পূর্বে রামুর নোনাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে অবসরগ্রহন করেন তিনি। শিক্ষক আবদুস শুক্কুরের ২ সন্তানই বিদেশে থাকেন। এ সুযোগে ভূমিদস্যুরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে এবং দীর্ঘদিন শিক্ষকের স্বত্ত্বদখলীয় জমিতে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা শুরু করে। ভূমিদস্যুদের তান্ডব দেখে সম্প্রতি স্ট্রোক করেন শিক্ষক। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর বর্তমান তিনি কিছুটা সুস্থবোধ করছেন। কিন্তু ভূমিগ্রাসীদের অপতৎপরতায় তিনি এখন মৃত্যু পথযাত্রী।

আবদুস শুক্কুরের স্ত্রী আয়েশা বেগম জানিয়েছেন- তাঁর স্বামীর পৈত্রিক ও ক্রয়কৃত জমিতে এখন ভূমিদস্যুরা রামরাজত্ব চালাচ্ছে। একজন অসহায় শিক্ষক সরকারি দপ্তর ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ দিয়েও সঠিক আইনী প্রতিকার পাচ্ছে না। এটা চরম দূঃখজনক। এখন জবর-দখলকারিরা প্রতিনিয়ত তাদের উল্টো প্রাণনাশের হুমকী-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। এ কারনে তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

শিক্ষক দম্পতি আরো জানান-জবর-দখলকারিদের বিরুদ্ধে তারা সর্বোচ্চ আইনী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন। এজন্য তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহ সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেছেন এবং ভূমিদস্যুদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে